সীমান্তে সুড়ঙ্গ-বিরোধী প্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল
নগর খবর ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রায় আড়াই মাস ধরে নির্বিচারে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর সঙ্গে চলছে স্থলপথেও অভিযান। অবিরাম এই হামলায় গাজা অনেকটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। তবে এরপরও হামাস শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। চালাচ্ছে পাল্টা হামলাও। হামাসের দুর্ভেদ্য সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করা হয়। আর তাই এবার সীমান্তে সুড়ঙ্গ-বিরোধী প্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকা এবং মিসর সীমান্তের কাছে ইসরায়েল ভূগর্ভস্থ অ্যান্টি-টানেল (সুড়ঙ্গ-বিরোধী) প্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা করছে বলে রোববার স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে।
ইসরায়েলের আর্মি রেডিও জানিয়েছে, গাজায় বর্তমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ফিলাডেলফিয়া অক্ষে এই প্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
সম্প্রচারকারী এই সংস্থার মতে, ইসরায়েলের একটি প্রতিনিধি দল প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে আলোচনার জন্য মিসরে গিয়েছিলেন। একজন ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রেডিওটি বলেছে, ‘এই প্রাচীর নির্মাণের জন্য ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছে মিশরীয়রা।’
অবশ্য ইসরায়েলের এই প্রতিবেদনের বিষয়ে মিসর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, ফিলাডেলফিয়া অক্ষ হচ্ছে গাজা উপত্যকার ভূখণ্ডের মধ্যে থাকা একটি সংকীর্ণ উপত্যকা। এটি গাজা ভূখণ্ড এবং মিসরের মধ্যে সীমান্ত বরাবর ১৪ কিমি (৮.৭ মাইল) এলাকাজুড়ে বিস্তৃত।
ইসরায়েলি চ্যানেল আই২৪নিউজ বলেছে, ‘গাজা ভূখণ্ডের পূর্ব রাফাহ অঞ্চলে টানেলের উপস্থিতি নিয়ে ইসরায়েল ভীত। এই এলাকাটিকে ফিলাডেলফিয়া অক্ষের সম্প্রসারণ বলে মনে করা হয়।’
চ্যানেলটির মতে, মিসর বারবার বলেছে- গাজা উপত্যকার সীমান্ত এলাকায় কোনও ভূগর্ভস্থ টানেল নেই। তবে ইসরায়েল বিশ্বাস করে, ভূগর্ভস্থ টানেলগুলো ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে হামাসের অপারেশনের প্রধান চাবিকাঠি।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকে টানা প্রায় আড়াই মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি এই আগ্রাসনের নিহত হয়েছেন প্রায় ১৯ হাজার ফিলিস্তিনি। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫১ হাজার মানুষ।