বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় নগর ভবনে মেয়রদপ্তর কক্ষে প্রতিক্রিয়ায় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘গত কিছুদিন আগে বাঘায় দুইপক্ষের সংঘর্ষে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল গুরুতর আহত হয়। তাকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং চিকিৎসা নিয়ে তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়। হঠাৎ করে গতকাল (বুধবার) সকালে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। বিকেলে ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি..রাজিউন)। মরহুম বাবুল সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা ছিলেন, আমার অনেক স্নেহভাজন ছিলেন। আমি আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই তাকে পাশে পেয়েছি, বাবুল যখন ছাত্রনেতা, তখন থেকেই। তিনি নিবেদিত প্রাণ আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করার মতো নিন্দনীয়-নৃসংশ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনভাবে জড়িত থাকার কোন কারণ নেই, কোন সুযোগ নেই, যুক্তিও নেই। মরহুমের জানাযায় আমাকে দায়ী করে, সরাসরি আমার নাম ধরে, আমার দলীয় পদ উল্লেখ করে, আমার পাশাপাশি আমাদের আরেকজন সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ সহ আরো কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বাঘা-চারঘাটের বর্তমান এমপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ঈর্শাপরায়ণভাবে এ রকম উক্তি করতে পারেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। জানাযা নামাজের মতো একটি পবিত্র কাজ, যেখানে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয়, সেখানে এভাবে মামলা করা হবে, মোবাইল কললিস্ট চেক করা হোক, মামলার আসামী করা হবে-এই সমস্ত কথা তাঁর কাছ থেকে আমি আশাই করিনি। তিনি কী উদ্দেশ্যে বলেছেন, কেন বলেছেন তা তিনিই বলতে পারবেন। যারা রাজনীতি সচেতন ও বিবেকসম্পন্ন মানুষ তারা নিশ্চিয় এ রকম কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করবেন না। করার কোন কারণ নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা একজন দলীয় নেতাকে হারালাম। এ ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও কষ্টকর। বাবুল হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার আমিও চাই। আমার বয়স এখন ষাটের ওপরে। আমার রাজনৈতিক জীবনে এ ধরনের ঘটনায় মদদ দেওয়ার ইতিহাস নেই। মনে হচ্ছে যেন লাশটি কারও দরকার ছিল। একজনের মৃতদেহ দরকার ছিল যেটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করা যায় এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায়। এ রকম একটা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকারী একটি গোষ্ঠী ছিল, এখনো আছে বলে আমি মনে করি, অনেকেও তাই মনে করেন। এই লাইনেও বিষয়গুলো তদন্ত হওয়া দরকার।’
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের পর রাজশাহীতে যারা নতুন সংসদ সদস্য হলেন, তারা নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের নিজস্ব অবস্থান তৈরি করতে গিয়ে ভাল-মন্দ অনেক কিছু করেছেন। আমরা যারা বংশগতভাবে, জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগ করি, ছোটবেলা থেকে বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি, মেনেছি, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে মেনে রাজনীতি করি, আমরা হচ্ছি আদি ও অকৃত্রিম। যারা পরে নানাভাবে এসেছেন, তারা কী উদ্দেশ্যে এসেছেন, জনগণ ভালোভাবে বলতে পারবেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও যারা তাদের চিনেন জানেন, এলাকাবাসী তারা ভালো বলতে পারবেন। আমার কাছে মনে হচ্ছে, আমরা যারা আওয়ামী লীগের রক্ত নিয়ে বড় হয়েছি, তাদেরকেই এখন হেনস্থা করার অপচেষ্টা করছেন নতুনেরা।’
রাসিক মেয়র বলেন, বাবুল এর মৃত্যুর খবর পেয়ে গতকাল বুধবার আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়েছিলাম। তাঁর সন্তানের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছি। আমি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকবো ইনশাল্লাহ।