এলগারের বিদায়ী টেস্ট জিতে সিরিজ ড্র করল ভারত
নগর খবর ডেস্ক : কেপটাউন টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্যে কী আছে, সেটি প্রথম ইনিংসেই প্রায় নিশ্চয়তা পাওয়া গিয়েছিল। ভারতীয় পেসারদের তোপে তারা মাত্র ৫৫ রানেই গুটিয়ে যায়। আরও একটি বিষয় সত্যি হয়েছে সিরিজের শেষ ও দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটিতে। প্রথম দিনেই দু’দল হারিয়েছিল ২৩ উইকেট, ফলে দ্বিতীয় দিনেরও আজ (বৃহস্পতিবার) পুরোটা সময় খেলা হবে কি না সেই শঙ্কা ছিল। ভারতের দেওয়া লিড টপকে এদিন প্রোটিয়ারা মাত্র ৭৯ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায়। যা ভারত পেরিয়েছে ৭ উইকেট হাতে রেখেই।
এর মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর টেস্ট সিরিজও ১-১ সমতা দিয়ে শেষ করল ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে সেঞ্চুরিয়ানে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ইনিংস ও ৩২ রানের ব্যবধানে হেরেছিল ভারত। এরপর পেসস্বর্গ কেপটাউনের উইকেটে স্বাগতিকরা নিজেদের ফাঁদে নিজেরাই পড়েছে। ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজের ৬ শিকারে তারা প্রথম ইনিংসে তুলতে পারে মাত্র ৫৫ রান। যা পেরিয়ে সফরকারীরা লিড পায় ৯৮ রানের। অথচ ওই রানে পৌঁছার আগেই দ্বিতীয় ইনিংসে ডিন এলগারের দল পাঁচ উইকেট হারায়। তবে শেষ পর্যন্ত এইডেন মার্করামের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে অলআউট হওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৭৬ রান তোলে।
এই ম্যাচটি টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত দৈর্ঘ্যের। দু’দল চার ইনিংসে সবমিলিয়ে মাত্র ৬৪২ বল (১০৭ ওভার) খেলেছে। এর আগে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত দৈর্ঘ্যের ম্যাচ ছিল ৬৫৬ বলের (১০৯.২)। তবে সেটি অনেক আগের, ১৯৩২ সালের সেই ম্যাচে মেলবোর্নে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। আধুনিক ক্রিকেটে সবচেয়ে স্বল্প সময়ের টেস্ট ম্যাচটি হয়েছে ২০২১ সালে। আহমেদাবাদে ইংল্যান্ড ও ভারতের ম্যাচটিতে হয়েছে ৮৪২ বল (১৪০.২ ওভার)।
কেপটাউনে দ্বিতীয় টেস্টে বিজয়ী ভারতের হয়ে দুই ইনিংসে ভিন্ন দুই পেসার নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে সিরাজ এবং পরেরটিতে সমান ৬টি উইকেট নিয়েছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। বোলারদের এমন দাপুটে পারফরম্যান্সে দ্বিতীয় দিন খেলা হয়েছে ৩১.৫ ওভার। প্রথমদিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৬২ রান। দ্বিতীয় দিন আর ১১৪ রান যোগ করতেই তারা বাকি ৭ উইকেট হারায়। তবে তাদের দৌড় এতদূরও পৌঁছাত না, যদি না মার্করাম ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে দারুণ এক সেঞ্চুরি না করতেন। ১০৩ বলে বলে ডানহাতি এই ব্যাটার ১৭টি চার এবং দুই ছক্কায় করেন ১০৬ রান।
পরবর্তীতে ভারত ৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে থাকে। কেপটাউনের পিচে অতিরিক্ত বাউন্সের কারণে সেটাই তখন সঠিক মনে হয়েছিল। তবে ব্যক্তিগত ২৮ রান তুলতেই নান্দ্রে বার্গারের বলে ওপেনার যশস্বী জয়সওয়ালকে হারায় ভারত। ২৩ বলের ইনিংসটিতে তিনি ছয়টি চার হাঁকান। এরপর ১০ রান করা শুভমান গিলকে কাগিসো রাবাদা এবং ১২ রানেই বিরাট কোহলিকে ফেরান মার্কো জানসেন। শেষ পর্যন্ত রোহিত শর্মার অপরাজিত ১৬ রানে ভর করে ভারত দ্বিতীয় টেস্টে জয় তুলে নিয়েছে।
এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডেতে ভারত ২-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল। পরবর্তীতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ফরম্যাটের দুটি সিরিজই ড্র হয়েছে ১-১ ব্যবধানে।