গ্রীষ্মকালে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য কার্যকরী নির্দেশনা


গ্রীষ্ম প্রকৃতির এক রুক্ষ রুপ। রোদের তীব্রতা, শরীরের অতিরিক্ত ঘাম, পানিশূন্যতা, হিট স্টোককের মতো স্বাস্থ ঝুকি, সবকিছু মিলিয়ে এ সময়ে আমাদের শরীর ও মনে বাড়তি চাপ পড়ে। তবে কিছু স্বাস্থবিধি মেনে চললেই গ্রীষ্মকাল ও হতে পারে স্বাস্থসম্মত ও আরামদায়ক।
এই মৌসুমে ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর প্রচুর পরিমানে পানি ও ইলেকট্রোলাইট হারায়। ফলে দেখা যায় পানি শূন্যতা, মাথা ব্যাথা, ক্লান্তি, এমনকি হিট স্টোকের মতো মারাত্মক সমস্যা।
প্রতিদিন ২.৫৩ লিটার পানি পান করুন। লেবুর শরবত, ডাবের পানি, তাজা ফলের রস খান। চা কপি বা কোল্ড ড্রিস্ক এর পরিবর্তে ঘরোয়া পানীয় বেছে
নিন। তেল-মসলাযুক্ত খাবার, বাইরের ফাস্ট ফুড বা অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার গ্রীষ্মকালে হজমে সমস্যা, অ্যাসিডিটি এবং ডাইরিয়া সৃষ্টি করতে পারে। শরীর হালকা রাখতে হলে খাবারও হালকা হতে হবে।
তাজা ফল: তরমুজ, বাঙ্গি, আম, লিচু।শাকসবজি: শসা, লাউ, পালং, পুইশাক। সহজপাচ্য প্রোটিন: ডিম, মাছ, দুধ।
দুপুর ১২টা হতে ৩টার মধ্যে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন। ছাতা, সানগøাস ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। হালকা রঙ্গের ঢিলে ঢালা শুতির পোষাক পরুন। মাথায় কাপড় বা টুপি ব্যাবহার করুন।
গ্রীষ্ম কালে ঘাম ও ধুলাবালির কারণে ত্বকে অ্যালার্জি, ফুসকুড়ি, ও ব্রণ দেখা দিতে পারে। দিনের বেলায় অন্তত দুইবার মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করুন। বাইরে
যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। নিয়মিত চুল পরিষ্কার করুন। প্রাকৃতিক তেল ( নারকেল, অলিভ ওয়েল) ব্যবহার করুন। রোদে চুল ঢেকে রাখুন।
গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া মশা, মাছি ও জীবানুর জন্য আদর্শ। এত ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া বা জ¦রের মতো রোগ ছাড়াতে পারে। ঘরবাড়ীর আশে পাশে জমে থাকা
পানি পরিষ্কার করুন। মশারী বা রিপেলেন্ট ব্যবহার করুন। রান্নাঘর ও বাথরুম নিয়মিত জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করুন।
গ্রীষ্মে অলসতা সহজেই ঘিরে ধরে। তবে শরীরকে সচল ও মনকে প্রফুল্ল রাখতে ব্যায়ম অপরিহার্য। সকালের দিকে হালকা হাটা বা ব্যায়ম করুন। ঘরের
ভেতর হালকা স্ট্রেচিং অনুশীলন করতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
শিশু ও বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক ভাবে কম, তাই গরমে তাদের অসুস্থ হওয়ার ঝুকি বেশি। তাদের পর্যাপ্ত পরিমানে তরল খাবার দিন।
দিনের সবচেয়ে গরম সময়ে বাইরে যেতে দেবেন না। হালকা ও আরাম দায়ক পোষাক পরান।
গ্রীষ্মকাল প্রকৃতির এক চ্যালেঞ্জ, তবে এটি মোকাবেলা করা সম্ভব যদি আমার কিছু সাধারন কিন্ত কার্যকর স্বাস্থবিধি মেনে চলি। শরীরকে হাইড্রেট রাখা,
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং সঠিক জীবনযাপন গ্রীষ্মে সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি। তাই আসুন , সচেতন হই ও সুস্থ থাকি ।