বিমানবন্দরে দেড় ঘণ্টা
২৪ আগস্ট এক দিনের জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন মাহিয়া মাহি।
কোন দেশ সেটা জানাতে চাননি। বান্ধবীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে দেড় ঘণ্টা কর্তৃপক্ষের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন ‘অগ্নি’কন্যা। তবে সেটা নিয়ে মোটেও বিরক্ত হননি; বরং উপভোগ করেছেন।
মাহি বলেন, ‘এখন দেশ একটা বিশেষ সময় পার করছে।
এই সময়ে অনেকের বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। আমি সেই তালিকার কেউ কি না সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্যই এই জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কর্তৃপক্ষ। যখন তাঁরা নিশ্চিত হলো, আমি কালো তালিকাভুক্ত নই, তখন কেন বিদেশে যাচ্ছি সেটা জানার চেষ্টা করে। আমি তাঁদের জানালাম, চিকিৎসার জন্য।
একটু অবাক হলেও শেষ পর্যন্ত আমাকে তাঁরা অনুমতি দেন।’
মাহি আরো বলেন, ‘ভারতেই যেতাম চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এই মুহূর্তে ভিসা পেতে দেরি হবে ভেবে ওই দেশটিতে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) গিয়েছিলাম। বিশ্বাস করবেন না! এক দিনের নোটিশেই চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছি। প্রথমবার দেশটিতে গিয়ে খুব ভালো লাগল।বান্ধবীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আবার যাব, থাকব বেশ কয়েক দিন।’
বন্যার্তদের পাশে আছেন
বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য প্রথম থেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন মাহি। এরই মধ্যে তাঁর পক্ষ থেকে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন ত্রাণ তহবিলে নগদ টাকাও দিয়েছেন তিনি। মাহি বলেন, ‘সব সময় মেনে এসেছি, সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের পাশে থেকেছি। অনেক বন্ধুকেও সহযোগিতা করতে বলেছি। ফারিশ (সন্তান) ছোট না থাকলে হয়তো নিজেই হাজির হতাম বন্যাদুর্গত এলাকায়।’
কাজে ফেরার অপেক্ষায়
একটা সময় ছিল, প্রতিদিনই শুটিং করতেন মাহি। ২০২০ সাল পর্যন্ত তাঁর শিডিউলের অপেক্ষায় থাকতেন প্রথমসারির নির্মাতারা। তবে এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। মাহি নিজেই অপেক্ষায় আছেন শুটিংয়ে ফেরার। তবে সেটা যে দু-এক মাসের মধ্যে হবে না—ভালো করেই জানেন। মাহি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পেয়েছে এখনো এক মাস হয়নি। তাঁদের সব কিছু গুছিয়ে উঠতে সময় লাগবে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বন্যা। এই পরিস্থিতি সামলাতেও দেরি হবে। দেশের এই পরিস্থিতিতে কেউ বিনোদনের দিকে নজর দেবে বলে মনে হয় না। কোনো প্রযোজক লগ্নি করবেন কি না সেটা নিয়েও আমি সন্দিহান। আমি যে অঙ্গনটিতে কাজ করি, সেই চলচ্চিত্র এখন ক্রান্তিলগ্নে। আশা করব, নতুন সরকার এই অঙ্গনটাকে প্রাধান্য দেবে। কারণ শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ না ঘটলে তো জাতির উন্নতিও আশা করা যায় না।’
মাহি গত এক মাসে মাত্র এক দিন শুটিংয়ের জন্য বের হয়েছিলেন। তাও ছিল ওভিসির কাজ। বাকি দিনগুলো কাটছে ঘরবন্দি হয়ে। মাহি বলেন, ‘আমি বড় ইউনিটে কাজ করে অভ্যস্ত। বড় ক্যানভাসের ছবি খুব মিস করি এখন। জানি না কবে আবার শুরু করতে পারব!’
নতুন সরকারের কাছে চাওয়া
আওয়ামী লীগ সমর্থন করেন মাহি। গত নির্বাচনে দলটির হয়ে মনোনয়ন চেয়েছিলেন, না পেয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচনও করেন রাজশাহী-১ আসন থেকে। মাত্র ৯ হাজার ৯ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। তবু মন খারাপ না করে শেখ হাসিনার দলের হয়ে কাজ করে যাবেন। বর্তমান সরকারের কাছে মাহির কিছু চাওয়া আছে। প্রথমত মাহি চান, আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা অন্য যেকোনো সংগঠনের কর্মীরা যেন ভালোকে ভালো, খারাপকে খারাপ বলার অধিকার পায়। মত জানানোর স্বাধীনতা থাকে। দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের মানুষের মানবিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে হবে। তৃতীয়ত, বৈষম্য করা যাবে না। চতুর্থত, বিনোদন ও সংস্কৃতির উন্নয়নে সচেষ্ট রাখতে হবে। পঞ্চমত, আইন-শৃঙ্খলা যেন দুর্নীতিমুক্ত থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।