নগর খবর ডেস্ক : সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি খোঁজতে ফের কমিটি গঠন হয়েছে। এই কমিটিকে নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মঞ্জুরি কমিশন সূত্র এমন তথ্য জানিয়েছে।
কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশনের (ইউজিসি) নতুন সদস্য প্রফেসর ড. হাসিনা খান। এছাড়া অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সাবেক সদস্য প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী ও ইউজিসির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ফের নতুন প্রস্তাব চেয়েছে। এর আলোকেই নতুন তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটিকে কাজ শুরু করতে বলেছি। তারা সবার সঙ্গে কথা বলে নতুন প্রস্তাব দিলে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তবে কতদিনের মধ্যে নতুন পদ্ধতি দেবে তা ঠিক করে দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, ২০২১ সালে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছিল (ইউজিসি)। এজন্য একটি খসড়া অধ্যাদেশও তৈরি করে সম্মতির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানে হয়। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কয়েকটি বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাধায় সেই খসড়ায় সম্মতি মেলে না। চিন্তা ছিল ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ায়। কিন্তু শেষ পযন্ত সেই উদ্যোগও ভেস্তে যায়। ফলে এ বছরও আগের পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন করে একক ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনায় জন্য ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) গঠন করার কথা ছিল। তবে এনটিএ গঠনের আগ পর্যন্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনার জন্য একটি নীতিমালা তৈরির কাজ করছে কমিশন। এর অংশ হিসেবে গত ৩১ অক্টোবর ইউজিসি কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ-২০২৩ শীর্ষক একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। যদিও এ প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের বিভিন্ন দুর্বলতা তুলে এর অনুমোদন না দিয়ে নতুন করে প্রস্তাবনা চেয়েছে মন্ত্রণালয়।
সূত্র বলছে, ইউজিসির পাঠানো প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের কাঠামো, এর চেয়ারম্যান পদ ও ব্যয়ের ক্ষমতাসহ বেশকিছু বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের জোর আপত্তি থাকায় তার সম্মাতি দেয়নি মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন একটি নীতিমালা তৈরি করতে যাচ্ছে কমিশন। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধিকে যুক্ত করা হবে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের ব্যয়ের ক্ষমতায়ও কিছু পরিবর্তনের কথা শোনা যাচ্ছে।
জানা গেছে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি কার্যক্রমে জটিলতা, দীর্ঘসূত্র, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ভোগ, অতিরিক্ত টাকা ব্যয় ও সময়ক্ষেপণ হয়। এ জন্য বিদ্যমান ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কার প্রয়োজন। রাষ্ট্রপতিও একক ভর্তি পরীক্ষা চালুর অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।