ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দ্রুত সময়ের মধ্যে সৎ, যোগ্য ও বিশ্বমানের উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিলটি শুরু করে তারা।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই জায়গায় এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘রেকর্ড দেখে ভিসি দিন দুর্নীতির খবর নিন, ক্লিন ইমেজের ভিসি চাই, ‘ক্লাস চাই পরীক্ষা চাই অবিলম্বে ভিসি চাই’, একাডেমিক স্থবিরতা দূর করতে যোগ্য ভিসি চাই, ‘ভিসি চাই এমন, শিক্ষার্থীর ব্যাথায় কাদে যার মন’ বিশ্বমানের ভিসি চাই, সেশনজটের কবর চাই, ইবির আঙিনায় দুর্নীতির ঠাই নাই, সৎ ও সাহসী ভিসি চাই’সহ বিভিন্ন প্লাকার্ড ধারণ করতে দেখা যায়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্দেশ্য থেকে ছিটকে পড়েছে। এই পর্যন্ত আমরা ১৩ জন উপাচার্যের মধ্যে ১ জনও পাইনি যিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যর সাথে যুক্ত ছিল। আমরা বিগত ১৫ বছরে দলীয় লেজুড়বৃত্তির মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ দিতে দেখেছি। ইতোমধ্যে আমরা সেই লেজুড়বৃত্তিক প্রশাসনকে হটিয়েছি। এমন প্রশাসন আমরা আর চাই না। আমরা নিরপেক্ষ, সৎ, দক্ষ ও শিক্ষার্থীবান্ধব, একাডেমিশিয়ান প্রশাসন চাই।
এ সময় বক্তারা আরও বলেন, আমরা এমন উপাচার্য চাই না, যে দিনে দুর্নীতি করবে, রাতে মাদকের আসর বসাবে। এমনকি ক্যাম্পাসে রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করবে এমন কোন উপাচার্য চাইনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক বিভাগকে রাজনীতি ও সেশনজট মুক্ত করবে, এমন উপাচার্য চাই।
তারা আরোও বলেন, বিগত সময়ে ইবি, ঢাবি, রাবিসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও ছাত্রলীগের মদদপুষ্ট হয়ে বিভিন্নভাবে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। এখনও কেউ কেউ সেই লেজুড়বৃত্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এমন দুর্নীতির রেকর্ড যাদের আছে, তাদের আমরা উপাচার্য হিসেবে দেখতে চাই না।
বৈষমবিরোধী আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, স্বৈরাচারের পতনের পর অনেক উপাচার্য পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ তারা লেজুড়বৃত্তির মাধ্যমে উপাচার্য হয়েছেন। তাই আমরা এমন কাউকে উপাচার্য চাই না, যাকে আবার দুর্নীতির অভিযুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে পদত্যাগ করতে হয়।
সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, বিগত ১৫ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। সাধারণ মিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিলো না। সেই স্বৈরাচার সরকরের পতনের সাথে সাথে তাদেরও পতন হয়েছে। এখন আবার সেই আখড়া তৈরি করার চেষ্টা কেউ করবেন না। ছাত্রসমাজ তা মানবে না।
এছাড়াও বলেন, ইতিমধ্যে ঢাবি, রাবি ও জবি সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদদের রক্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।