f
লাইফস্টাইল

ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস

নিউজ ডেস্ক : তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল জনজীবন। কাঠ ফাটা রোদে ওষ্ঠাগত মানুষ ও প্রাণীকুল। তীব্র গরম উপেক্ষা করে বাড়ির ছাদের ঢালায়ের কাজ করছেন নির্মাণ শ্রমিকেরা। তাপ থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে হা-মুখে পানি দিচ্ছেন নির্মাণ শ্রমিকেরা। কেউ কেউ সেই পানিই পানও করছেন।

ভাদ্র মাস বিদায় নিয়েছে। আশ্বিনও পার করে ফেলেছে পাঁচ দিন। শরতের এই সময়ে তাপমাত্রা কমার কথা; কিন্তু ঘটছে তার উল্টো। সারা দেশে ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলেও বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। ঘরে-বাইরে সবখানেই এতটা গরম যে মনে হচ্ছে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতির সঙ্গে লোডশেডিং যুক্ত হয়ে ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গরমের এই অস্বস্তি আরও তিন দিন থাকবে। আগামী মঙ্গলবার থেকে গরম কমতে পারে। হতে পারে বৃষ্টিও। অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করেছে। দেশের বেশির ভাগ জায়গায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি বা তার বেশি রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

হঠাৎ এমন তাপপ্রবাহে অনেকে ছাতা মাথায় দিয়ে বাইরের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সারছেন। তবে বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ। সকাল শুরু হতেই সূর্যের তেজ বাড়তে থাকে। রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বাসচালক খালেক হোসেন বলেন, ‘হুট করে দুই দিন থেকে অনেক গরম। এর আগে রোজার সময় এমন ছিল। বাইরে তো গরম আছেই, গাড়ির ভেতরে ইঞ্জিনের গরম।’

একই এলাকার চা-দোকানদার মো. কবির বলেন, গরমে দিনে চা বিক্রি কমে গেছে। কে এমন গরমে চা খেতে আসবে?

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নেত্রকোনা ও আশুগঞ্জে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মাঝারি তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত। এ সময় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। শুধু বৃষ্টি হয়েছে রাঙামাটিতে ৩ মিলিমিটার।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, এখন তাপমাত্রা যেমন আছে তা অ্যালার্মিং। কক্সবাজার আর রাঙামাটি ছাড়া দেশের সব জায়গায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। গরম কেন? এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এই সময়ে বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রা বাড়ে। কিছুদিন আগেই একটা নিম্নচাপ ছিল। এটা চলে যাওয়ায় আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেছে। এতে করে তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। বাতাসে পর্যাপ্ত জলীয়বাষ্প রয়েছে।

বজলুর রশীদ আরও বলেন, এখন তাপপ্রবাহের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। আগেও এমন হতো, তবে সাম্প্রতিক সময়ে এটা বর্ষাকালেও দেখা যাচ্ছে। এমন তাপমাত্রা আরও দুই দিন থাকবে। এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর একটা লঘুচাপ হতে পারে। তখন বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বৃষ্টি কমবেশি থাকবে। এরপর মৌসুমি বায়ু বিদায় নেবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ুবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের (থ্রিসিএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস ছিল বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ সেপ্টেম্বর। তবে চলতি বছরের শুরুতে নেচার জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, জলবায়ুর প্যাটার্ন এল নিনো আবারও ফিরে আসায় ২০২৪ সাল বিগত বছরের চেয়েও বেশি উষ্ণ হতে যাচ্ছে।

Back to top button