গত বছরের অক্টোবরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে তৈরি ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমা। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি হয় এই সিনেমাটি। বলা হয়, দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেটের নির্মিত সিনেমা এটি। যেই ছবি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় ৮৩ কোটি টাকা)।
‘মুজিব’ সিনেমার সেই ব্যয় নিয়েই এবার প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। সম্প্রতি তানভীর তারেককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘মুজিব নামে যে সিনেমাটি বানানো হয়েছে, আমি সেটার হিসাব চাই। আমি দেখতে চাই, এত বাজেটের একটা সিনেমা কীভাবে এত খারাপভাবে বানানো যায়!’
মুক্তির পর থেকেই ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামল থাকায় সেসময় অধিকাংশ চলচ্চিত্রবোদ্ধারাই এই ছবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অনেকেই আওয়ামী লীগের দুঃশাসন নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। অভিনেত্রী বাঁধনও তাদেরই একজন। ছাত্রদের আন্দোলন থেকে, রাজপথে বেশ সরব ছিলেন তিনি।
এরই মধ্যে মুজিব সিনেমার খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাঁধন বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা বাজেট নিয়ে কী সিনেমাটা বানালো! সেই টাকাগুলো কোথায় গেল, এই হিসাব তো আমি দেখতে চাই। আমার খুবই কষ্ট হয়েছে, দেশের টাকা দিয়ে বানানো, আমাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বানানো সিনেমা, যা ইচ্ছা তাই একটা বানিয়ে দেওয়া হলো!’
২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভেদকর মুজিব সিনেমা নির্মাণের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি অনুযায়ী, মোট বাজেটের ৬০ শতাংশ অর্থ দিয়েছে বাংলাদেশ। সে হিসাবে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে বাংলাদেশের বিনিয়োগ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। অন্যদিকে, বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ ভারতের বিনিয়োগ করার কথা; বাংলাদেশি টাকায় যা ৩৩ কোটির বেশি।
মুজিব: একটি জাতির রূপকার সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। তিনি পারিশ্রমিক হিসেবে নিয়েছেন মাত্র এক টাকা। এক টাকা পারিশ্রমিক নেন ফজিলাতুন নেছা মুজিবের চরিত্রের অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাও।
সিনেমার অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া, রিয়াজ আহমেদ, দিলারা জামান, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম আহমেদ, জায়েদ খান, খায়রুল আলম সবুজ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, তৌকীর আহমেদ, মিশা সওদাগরসহ শতাধিক শিল্পী।