এআই যুগে একাডেমিক কাজের ক্ষেত্রে নৈতিকতা বজায় রাখতে হবে’


নগর খবর ডেস্ক : বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগে একাডেমিক কাজের ক্ষেত্রে নৈতিকতা বজায় রাখতে হবে। একাডেমিয়ায় এই ধরনের উদ্ভাবন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে দেশে স্পষ্টনীতির অভাব রয়েছে। তাই একাডেমিক কাজ যারা করেন তাদের সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিটি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বায়োএথিক্স সোসাইটি (বিবিএস) ও বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) যৌথ উদ্যোগে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তিতে একাডেমিক ইন্টিগ্রিটির প্রয়োজন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মোদাচ্ছের আলী বলেন, অ্যাকাডেমিক ইন্টিগ্রিটি হলো একাডেমিক কাজের নৈতিক কোড এবং নৈতিক নীতি। একাডেমিক মান বজায় রাখার জন্য শিক্ষাগত মূল্যবোধ গ্রহণ করা প্রয়োজন। একাডেমিক কাজ সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষাবিদদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা নৈতিকভাবে এবং একাডেমিক সততানীতি অনুযায়ী এআই ব্যবহার করছেন।
আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং জাতীয় গবেষণা নীতিশাস্ত্র কমিটির চেয়ারম্যান ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, একাডেমিক সততা একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং ন্যায়সঙ্গত শিক্ষা পরিবেশের ভিত্তি। শিক্ষক, ছাত্র, লেখক, পর্যালোচক এবং জার্নাল সম্পাদকদের চুরির বিপদ এবং একাডেমিক অসততার পরিণতি সম্পর্কে শিক্ষিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান সময়ে পাঠ তৈরির ক্ষেত্রে সম্পাদকদের সচেতন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সম্পাদকদের অবশ্যই এআই ভিত্তিক পাঠ্য তৈরির জন্য নতুন নির্দেশিকা এবং সুযোগসহ নীতি প্রদান করতে হবে। তাদের সমালোচনামূলকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।
একইসঙ্গে স্বাধীন চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতার সঙ্গে দ্বন্দ্ব এড়াতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা গবেষণায় ডাক্তারের পাশাপাশি এআই প্রযুক্তির একীকরণ করে রোগ নির্ণয়, রোগীর ফলাফলের পূর্বাভাস এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা ব্যক্তিগতকরণের জন্য নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে। আমরা যখন জার্নাল এডিটিং সিস্টেমের জটিলতাগুলো অনুসন্ধান করি, তখন আমরা একাডেমিক সম্প্রদায়ের জন্য জ্ঞানকে কিউরেট করার জন্য সূক্ষ্ম প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেই। তবে সিস্টেমটি কেবলমাত্র একটি প্রবেশদ্বার নয় বরং তথ্যের নিরন্তর সম্প্রসারিত মহাবিশ্বে গুণমান এবং প্রাসঙ্গিকতার অভিভাবকও। তাই অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এসময় অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের নিউরোলজি বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ডা. কাজী দ্বীন
মোহাম্মদ ও স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তররের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শাহ মনির হোসেন।
বাংলাদেশ বায়োএথিক্স সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক শামীমা লস্কর সম্মেলনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে একাডেমিক ইন্টিগ্রিটির প্রয়োজন ও এআইয়ের ভালো-মন্দের বোঝার ওপর গুরুত্ব দিতেই এমন আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণে মানুষের বুদ্ধির ওপর জোর দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।
এআই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা একদিন মানুষের ওপর এআই আধিপত্য গ্রহণ করবে। তাই বিষয়টির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সম্মেলনে ১৫০ জন মেডিকেল সম্পাদক, পর্যালোচনাকারী ও লেখক এবং ১০ জন বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেন।