ভাইরাল

ভাইরাল পথশিশু মারুফকে কেউ আঘাত করেনি

‘আচ্ছা, এই যে লকডাউন দিয়েছে, সামনে ঈদ, মানুষ খাবে কী? মাননীয় মন্ত্রী যে লকডাউন দিয়েছে এটা একটা ভুয়া। থ্যাংক ইউ!’

রাজধানীর জর্জকোর্ট এলাকায় একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের লাইভ চলাকালীন আচমকা ক্যামেরা ফ্রেমে এমন বক্তব্য দিয়ে রাতারাতি আলোচনায় আসে এক পথশিশু। অভুক্ত পথশিশুর সহজ স্বীকারোক্তি তাদের খাবারের দায়িত্ব কে নেবেন? এ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে।

ছেলেটির নাম মারুফ। সে থাকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক ও জর্জকোর্ট এলাকায়।

পথশিশুদের কাছ থেকে জানা যায়, আগে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে খাবার দেয়া হত, এখন দেয়া হয় না। লকডাউনের আগে মানুষের কাছে চেয়ে নিয়ে খেত, এখন সে সুযোগও কম। রাস্তায় মানুষ নেই, দোকানপাটও বন্ধ, মানুষের কাজ নেই। ‘আমাদের কে খাবার দেবে? কে টাকা দেবে? আমরা খাব কী?’ এমন প্রশ্ন মারুফসহ অনেক পথশিশুর।

পথশিশু মারুফের একটি ছবিতে শিশুটির চোখ ফোলাকে কেন্দ্র করে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা চলতে থাকে। কিন্তু শিশুটিকে ওই লাইভে বক্তব্য দেয়ার জন্য কেউ মারধর করেনি বলে জানিয়েছে মারুফ ও তার সঙ্গে থাকা অপর পথশিশুরা।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে বাহাদুর শাহ পার্কে মাটিতে শুয়ে থাকতে দেখা যায় পথশিশু মারুফকে। ড্যান্ডির নেশায় আসক্ত ছেলেটিকে ঘুম থেকে তুলে কেউ মেরেছে কিনা জিজ্ঞেস করলে ‘না’ বলে সে ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু তার চোখের ফোলা নিয়ে তার সঙ্গে থাকা পথশিশুরা বলে, তাকে কেউ মারধর করেনি তবে যে কোনো মাধ্যমে চোখে আঘাত লেগেছে।

অপরদিকে, একটি অনলাইন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে গতদিনের মন্তব্যের পর কোর্ট চত্বরে রাত ১০টার দিকে পুলিশে মেরেছে বলে মন্তব্য করে সে। নেশার ঘোরে একেক সময় একেক মন্তব্য করছে পথশিশু মারুফ।

বুধবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে আবারও শিশুটির খোঁজে গেলে জানা যায়, রাত তিনটার দিকে একটি সাদা গাড়িতে কয়েকজন লোক এসে তাকে পাঁচশ টাকা ও জামা কাপড় দেবে বলে গাড়িতে করে রায়সাহেব বাজারের দিকে নিয়ে যায়। তাকে রাতের পর থেকে আর দেখা যায়নি।

সুত্রাপুর থানার ওসি মামুনুর রহমান বলেন, তাকে কারা নিয়ে গেছে আমরা জানি না। আমাদেরকে জানিয়ে ওই পথশিশুকে কেউ নিয়ে যায়নি। সন্ধ্যার পর তাকে আবার ভিক্টোরিয়া পার্কে পাওয়া যায়। একটা সাদা রঙের প্রাইভেট কারে একটি বক্সে চাল, ডাল, তেল, আটাসহ তাকে দিয়ে রেখে গেছে বলে জানা যায়। কিছুক্ষণ পরে তার ওই চাল-আটা বাকি পথশিশুরা টানাটানি করে নিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

আরো দেখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button