সিলেটের গোলাপগঞ্জের মেয়র আমিনুল সাময়িক বরখাস্ত


সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আমিনুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আমিনুল ইসলাম ছুটি নিয়ে বিদেশে গিয়ে গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট ফোরাম আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ সরকার এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের বিরুদ্ধে হানিকর ও রাষ্ট্রের জন্য হানিকর বক্তব্য প্রদান করেছে।
এ ধরনের জনহানিকর বক্তব্য স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩২ এর (খ) ও (ঘ) এর অপরাধে মেয়রের পদ হতে অপসারণযোগ্য অপরাধ।
সিলেট স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩২ উপ-ধারা ১(খ) ও ১(ঘ) মোতাবেক বাংলাদেশ সরকার এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের বিরুদ্ধে হানিকর ও জনহানিকর বক্তব্য প্রদান করায় তার এই অপরাধমূলক কার্যক্রম পৌর পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী মর্মে সরকার মনে করেছে।
তাই স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩১(১) অনুযায়ী আমিনুল ইসলামকে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এ আদেশটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জারি করা হয়েছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের কাছে প্রজ্ঞাপনের একটি অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। এ প্রজ্ঞাপনের কপি সংশ্লিষ্ট পৌর মেয়রের কাছে পাঠিয়ে নিশ্চিত করে স্থানীয় সরকার বিভাগকে অবহিত করতেও জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের মেয়েকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের কারণ জানালেন মুরাদ হাসান
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক এমদাদুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, প্রজ্ঞাপনের কপি এখনো তার হাতে পৌঁছেনি। তবে ই-মেইল চেক করে দেখবেন, সেখানে এসেছে কি না। প্রজ্ঞাপন হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হেলালুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত ১০ নভেম্বর মেয়র আমিনুল ইসলা যুক্তরাজ্য সফরে যান। এর পর থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বে আছেন।
গত ২৪ নভেম্বর রাতে আমিনুল ইসলাম যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে প্রবাসীদের সংগঠন গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট ফোরাম আয়োজিত এক সভায় মন্তব্য করে বলেন, মন্ত্রী-সচিবদের ‘৫ পার্সেন্ট’ দিয়ে পৌরসভার উন্নয়নমূলক ফান্ড আনতে হয়।
এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগ এবং নির্বাচন নিয়েও বিভিন্ন কথা বলেন। এই বক্তৃতার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি আমিনুল ইসলাম পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। দলের বিদ্রোহী হওয়ায় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে তিনি বহিষ্কৃত হন।