তাপমাত্রা বৃদ্ধির পূর্বাভাস


ঈদের দিন মঙ্গলবার (৩ মে) সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা কিছুটা কম ছিল। আজ বুধবারও (৪ মে) সকালে রাজধানীতে বৃষ্টি ছিল। তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ মে) থেকে ফের তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বুধবার (৪ মে) আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে সারাদেশের দিনের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে বলে জানান এ আবহাওয়াবিদ।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়, পশ্চিম লঘুচাপের বর্ধিতাংশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
এদিকে ঈদের পরের দিন বুধবার (৪ মে) ছুটির সকালে মেঘের গর্জনে ঘুম ভেঙেছে রাজধানীবাসীর। সেই সঙ্গে ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সকাল সকাল এমন ঠান্ডা আবহাওয়ায় নগরবাসীর কাছে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বুধবার (৪ মে) ভোর সাড়ে ৫টা দিকে আকাশ থেকে শোনা যায় মুহুর্মুহু বজ্রপাতের শব্দ। এরপরেই শুরু হয় বৃষ্টি। ভোর থেকে শুরু হওয়া এ বৃষ্টি সকাল ৮টার মধ্যেই অবশ্য থেমে যায়। বৃষ্টি থামলেও আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা।
এর আগে ঈদের দিন মঙ্গলবার (৩ মে) সকালে রাজধানীসহ সারা দেশে ঝড়বৃষ্টি হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর কিছু কিছু এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। ৯টার কিছু পরে কালো মেঘে যেন সন্ধ্যা নামে আসে। এরপরই শুরু হয় কালবৈশাখি, বজ্রপাত সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বৃষ্টি অনেকটাই থেমে যায়, তবে আকাশ মেঘলা ছিল।
ঈদের দিন ঢাকায় ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। তবে ঈদের দিন রংপুর বিভাগে কোনো বৃষ্টি হয়নি। এরপর সারা দিন রাজধানীতে কোনো বৃষ্টি দেখা মেলেনি। তাই নগরজুড়ে ছিল ঈদের আনন্দ উদ্যাপন।
আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে, বুধবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কি.মি বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ২ নং নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র পশ্চিম অথবা উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নং নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ মে) সারাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খেপুপাড়া ও চট্টগ্রামে, ৩৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ বুধবার সকালে সারাদেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়াতে ২০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া বুধবার (৪ মে) ভোর ৬টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে কুমারখালীতে ৬৯ মিলিমিটার। এছাড়া ঢাকায় ১৪, টাঙ্গাইলে ৩৭, ফরিদপুরে ২১, মাদারীপুরে ১৪, গোপালগঞ্জে ১৯, নিকলিতে ২৭, ময়মনসিংতে ৩০, নেত্রকোনায় ২৯, চট্টগ্রামে ১৬, চাঁদপুরে ২৪, মাইজদীকোর্টে ২৫, সিলেটে ২৩, রাজশাহীতে ৩১, ঈশ্বরদীতে ৫৩, বগুড়াতে ২০, বদলগাছীতে ১৫, তাড়াশে ৩৮, খুলনায় ২২, মংলায় ২৪, সাতক্ষীরাতে ২৪, যশোরে ৩৯, চুয়াডাঙ্গায় ৪০ ও ভোলাতে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে।
ঢাকায় বুধবার সকালে বাতাসের গতি ও দিক দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে দমকায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ।