দারুল মদিনাহ স্কুলে অনিয়মের অভিযোগ, ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা


রাজশাহীর বোয়ালিয়া উপশহরে অবস্থিত দারুল মদিনাহ আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইংলিশ স্কুল নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। শিক্ষক সংকট, অতিরিক্ত ফি আদায়, অনিয়ম ও শিক্ষার নিম্নমান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি, বুধবার) শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ শিক্ষকরা পাঠদান বন্ধ করে দেন এবং কিছু শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন, যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অপমানজনক পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন অভিভাবকরা।
তাঁরা জানান, স্কুলটিতে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট চলছে। অনেক সময় শিক্ষক ছাড়াই ক্লাস পরিচালিত হয়, ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য বাড়তি টাকা দাবি করছে, যদিও ভর্তি হওয়ার সময় বলা হয়েছিল মাসিক বেতনের মাধ্যমেই সব খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কিন্তু এখন নানা অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে।
এক অভিভাবক বলেন, “আমরা শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে এক বছর সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু এখনো সমস্যা রয়ে গেছে। বরং বারবার বলার পরও কর্তৃপক্ষ শুধু ‘আর এক মাস সময় দেন’ বলে এড়িয়ে যাচ্ছে।”
অভিভাবকদের অভিযোগ, ভর্তি ও প্রচারণার সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ ওয়াই-ফাই ও এসি-যুক্ত ক্লাসরুম, ইংলিশ স্পোকেন ক্লাসসহ উন্নত শিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে এসব কিছুই চালু করা হয়নি। কয়েক দফা লিখিত অভিযোগ জমা দিলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
স্কুলের রাজশাহী শাখার এডমিন রাকিব হাসান বলেন, “এই সমস্যা ৬-৭ মাস ধরে চলছে। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই ছোটখাটো সমস্যা থাকে। অভিভাবক ও কর্তৃপক্ষ মিলে বিষয়টি সমাধান করবে।”
তবে, স্কুলের অফিস প্রধান বখতিয়ার আহমেদ বলেন, “আমি প্রথমবার শুনলাম যে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। অভিভাবকদের কাছ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে।”
অভিভাবকরা আরও অভিযোগ করেছেন, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগেও অনিয়ম চলছে। অনেক শিক্ষক নিয়োগপত্র ছাড়াই কাজ করছেন, ফলে তাঁরা নিজেদের চাকরি নিয়ে শঙ্কিত। বিশেষ করে নারী শিক্ষকরা পুরুষ অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতেও চান না, যা যোগাযোগে সমস্যা তৈরি করছে।
অভিভাবকরা দ্রুত সমস্যার সমাধান চেয়ে একটি স্বচ্ছ ও মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা চান, যথাযথ শিক্ষক নিয়োগ, প্রতিশ্রুত সুবিধা বাস্তবায়ন ও অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধ করা হোক।