মোহনপুরে মতিহার উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ
নিজেস্ব প্রতিবেদক: অবৈধ নিয়োগ, বিদ্যালয় ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ ও প্রকাশ্যে মাদক গ্রহনের অভিযোগে মোহনপুর মতিহার উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জাহানাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হযরত আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টায় মোহনপুর উপজেলার মতিহার উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ম্যানেজিং কমিটির বিভিন্ন দূর্নীতির বিষয় তুলে ধরে শিক্ষক ও ওই বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মো: শাকিল বলেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ নিয়োগের বানিজ্য করেছে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হযরত আলী। তিনি তার ইচ্ছে মতো নিজের পরিবার ও পছন্দের লোকজনদের এ বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ দেন। অবৈধ নিয়োগের মাধ্যমে তার মেয়ে খালেদা শিক্ষক পদে, ছেলে শামীম ক্যারানী পদে, তার সহযোগী জাহানাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বাবর আলী বাবর পিওন পদে, মোশারফ ও শুভকে অফিস সহকারী পদে নিযুক্ত করেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের ফান্ডে যত টাকা ছিলো সব তিনি আত্মসাৎ করেছেন এবং পরবর্তীতে কোনো ফান্ড সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হন। যার ফলে বর্তমানে বিদ্যালয় ভবনটি সম্পূর্ণ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের প্রায় ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেও ক্ষ্যান্ত হননি হযরত আলী। প্রকাশ্যে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তার দোসররা মদ্য পান করলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি বরং ক্ষমতার দাপটে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের দমিয়ে রেখেছিলেন। এর ফলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর বাজে প্রভাব পড়েছে। তাই এই ম্যানেজিং কমিটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চায়লে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসলে যে বা যারা এসবের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহী কলেজের ছাত্রনেতা সোহেল রানা বলেন, গত ৫ আগস্ট সহস্র রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হওয়া স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী বা তাদের দোসরদের কোনো অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে যারা এই দূর্নীতির সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, বিদ্যালয় ছাদের ফাটলের অবস্থা দেখে বোঝাই যাচ্ছে যখন তখন ভবনটি ধ্বসে যেতে পারে। তাই যতদ্রুত সম্ভব এটির মেরামতেরও ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৌপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সিনিয়র শিক্ষক মো: শরিফুল ইসলাম, মতিহারের সাবেক মেম্বার মো: নজরুল ইসলাম, পল্লি চিকিৎসক মো: সাবজাল হোসেন, সুশীল সমাজ ব্যক্তিত্বের মো: লিয়াকত আলী সহ স্থানীয় গ্রামবাসী।