সারাদেশ

তাপমাত্রা বাড়লেও কমছে না শীতের দাপট

নগর খবর ডেস্ক : সকালে সূর্যের আলো ছড়ালেও অব্যাহত রয়েছে শীতের দাপট। কুয়াশা না থাকলেও কনকনে শীত দুর্ভোগে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের মানুষ। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডায় কাবু এ সীমান্ত জনপদ।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ। আর সকাল ৬টায় রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রেকর্ড হয়েছিল ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সোমবার ৯.৭ ডিগ্রি, রোববার ১০ ডিগ্রি এবং শনিবার ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আর দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে ২৫ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।

আজ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৭টা থেকেই দেখা মেলে সূর্যের। তবে সূর্যের কিরণে আলো ছড়ালেও সকাল ৮টা পর্যন্ত হাড়কাঁপানো শীত বইতে থাকে। স্থানীয়রা জানান, আবার বিকেল থেকেই হিমেল বাতাস বইতে থাকে। আর সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রা বাড়ে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়ে সমানতালে।

গৃহিণীরা জানান, সকালে কুয়াশা না থাকলেও প্রচণ্ড ঠান্ডা। রাতে বৃষ্টির ফোটার মতো শিশির ঝরার শব্দ শোনা যায়। ঘরের মেঝে থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও বিছানা পর্যন্ত বরফ হয়ে উঠে। সকালে গৃহস্থালির কাজ করতে গিয়ে কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। এ সময়টাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে হচ্ছে।

 

এদিকে বরফঝরা শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে হিম সকালেই কাজে যেতে দেখা যায় এ অঞ্চলে পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, ভ্যানচালক, দিনমজুর থেকে নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের। পাথর শ্রমিকরা নদীতে বরফ জলের মধ্যেই নেমে পড়েন কাজে। এ আয়ের মধ্য দিয়ে চলে তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ।

 

মহানন্দা ও ডাহুক নদীতে পাথর তোলা ইরফান, আজগর ও মোতালেবসহ কয়েকজন পাথর শ্রমিক গণমাধ্যমে জানান, নদীর পানি বরফের মতো ঠান্ডা। কিন্তু কী করবো, পাথর তোলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। এ পাথর তুলেই জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। তাই পেটের তাগিদেই বরফ জলে নেমে পাথর তুলতে হচ্ছে।

 

গণমাধ্যমে চা শ্রমিক আরশেদ, সাইফুল, জামালসহ কয়েকজন জানান, এখন আগের মতো কুয়াশা নেই। কিন্তু কনকনে শীত। ভোরে প্রচণ্ড হিম-শীতের মধ্যেই তারা চা বাগানে পাতা তুলতে এসে হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। কিন্তু কী করবো, জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে।

এদিকে শীতের কারণে বাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগী বাড়তে শুরু করেছে। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।

 

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর এ জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আরও শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

Back to top button