কুষ্টিয়াসারাদেশ

কুষ্টিয়া-৩ আসনের নির্বাচন স্থগিত চান স্বতন্ত্র প্রার্থী

নগর খবর ডেস্ক : নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার, অনিয়ম, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও মারপিটের অভিযোগে নির্বাচন স্থগিত চেয়েছেন কুষ্টিয়া-৩ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তনু। রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে নিজ বাড়ির নির্বাচনী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহবুব উল আলম হানিফসহ পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তনু অভিযোগ করে বলেন, জেলা রিটার্নিং অফিসারের পরামর্শ মতো আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রে আমার পোলিং এজেন্টকে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে রিপোর্ট করতে বলি। কিন্তু অধিকাংশ কেন্দ্রের বাইরে নৌকার কর্মীরা আমাদের এজেন্টকে কেন্দ্রের আঙ্গিনার ভেতরে ঢুকতে চরম ভয়ভীতি ও বাধা প্রদান করে আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেয়নি বা ঢুকলেও ভোট গ্রহণ শুরুর পরপরই তাদেরকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, কুওয়াতুল ইসলাম আলিয়া মাদ্রাসা আমলাপাড়ায় মহিলা পোলিং এজেন্টটের কাছে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র ছিঁড়ে বের করে দেওয়া হয়। যার দালিলিক প্রমাণসমূহ আমাদের কাছে রয়েছে। হরিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মিলন মন্ডল পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়, আব্দালপুর ইউনিয়নের হাসানবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পোলিং এজেন্টকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এছাড়াও বিষ্ণুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জিয়ারখী, ঝাউদিয়া, বটতৈল, আলামপুর, হরিনারায়ণপুর, গোস্বামী দুর্গাপুর, মনোহরদিয়া, পাটিকাবাড়ি ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভা অন্তর্গত শতাধিক কেন্দ্রে একই ঘটনা ঘটে। জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ দাখিলের পরে কোনো কোনো কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করার কয়েক মিনিট পরেই পুনরায় পোলিং এজেন্টদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে বের করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রের বাইরেও এমন ভীতি প্রদর্শন শুরু করে যাতে ভোটাররা ভোট দিতে না আসে। আমি এই চিঠি বেলা ১১টায় লেখার সময় ভোট প্রদানের সংখ্যা দেখলেই ঘটনার সত্যতা জানা যাবে।

অন্যদিকে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রায় প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে প্রশাসনের একাংশের সহায়তায় ভোটারদের প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল প্রদানে বাধ্য করেছে। এমতাবস্থায় ভোটগ্রহণ স্থগিতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানাই।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. এহতেশাম রেজা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ার ৪টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট ৩১ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কুষ্টিয়া জেলায় মোট ভোটার ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯১২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ লাখ ২২ হাজার ৫১৬ জন এবং নারী ভোটার ৮ লাখ ২১ হাজার ৩৮৮ জন। কুষ্টিয়ার চারটি সংসদীয় আসনে মোট ৫৭৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।

Back to top button