লালমনিরহাট জেলার উত্তর অঞ্চলের মানুষ শীতে কাঁপছে
জেলা প্রতিনিধি : কনকনে ঠান্ডা ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে হাতীবান্ধা জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত টানা চার’দিন ধরে কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। শীতের কারণে শিশু ও বয়স্ক মানুষেরা নানা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এই শীতে অসহায় দরিদ্র মানুষেরা শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে লালমনিরহাট জেলার মানুষের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, যমুনা ও ব্রাহ্মপুত্র নদীর চরাঞ্চলের ভাসমান পরিবারগুলো ঠান্ডায় দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।
হিমেল হাওয়া এবং কনকনে ঠান্ডার কারণে দিনমজুররা কাজে যেতে পারছে না। রাস্তাঘাট-হাট বাজার এবং শহরে লোকজনের চলাচল কমে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ঘন কুয়াশা এবং ঠান্ডায় অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীরা যথা নিয়মে কর্মস্থলে যেতে পারছে না।
সকালে ও রাতে যানবাহন চলাচল অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। এমন কি ঠান্ডার কারনে নানাবিধ রোগব্যধির প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। এ কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ও ঔষুধের দোকানগুলোতে রোগির উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
চরের ছিন্নমুল পরিবারগুলো খড় কুঁটো জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণ করছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশু ও প্রসূতি মা’য়েরা নিদারুন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিত্বে জানা গেছে, হাতীবান্ধা কনকনে ঠান্ডার পাশাপাশি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে হিমেল হাওয়া ও ঘনকুয়াশা অব্যাহত থাকবে কয়েক দিন।
গত ৯ জানুয়ারি থেকে শৈত্যপ্রবাহ দিন দিন আরও বাড়ছে। এভাবে শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকলে জনজীবনে দূর্বিসহ পরিস্থিতি নেমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। শীতের দুর্ভোগ কমাতে অসহায় ছিন্নমূলসহ খেটে খাওয়া গরিব দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শীতবস্ত্র বিতরণে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সমাজের সচেতন মানুষরা।
শীতের তীব্রতার কারণে শীতজনিত নানা রোগ বিশেষ করে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। এসব রোগে আক্রান্তদের মধ্যে শিশু-বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন ভিড় করছেন সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে। এছাড়া অনেকে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।