নাটোরসারাদেশ

স্কুলে ঢুকে ছাত্রকে মারধর, বাধা দেওয়ায় শিক্ষককে পেটাল বহিরাগতরা

নগর খবর ডেস্ক : নাটোরের সিংড়ায় স্কুলে ঢুকে এক ছাত্রকে মারপিট করে জখম অবস্থায় তুলে নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেওয়ায় বিদ্যালয়ের ২ শিক্ষককে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক সাইদুল ইসলাম বাড়ি ফেরার পথে দ্বিতীয় দফায় মারধর করা হয় তাকে। মারধরের শিকার অপর সহকারী শিক্ষকের নাম রেজাউল নবী লিটন।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বিলদহর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে বিলদহর উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র আশিকুর রহমানকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে স্থানীয় রাহুল ইসলাম নামে এক যুবক। খবর পেয়ে শিক্ষকরা এগিয়ে গিয়ে আশিকুর রহমানকে উদ্ধার করে বহিরাগত রাহুলকে স্কুলের অফিস কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে শিক্ষকরা হামলাকারী রাহুলকে জিজ্ঞাসাবাদসহ বকাঝকা করেন। এর কিছুক্ষণ পর বহিরাগত রাহুলের বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনরা স্কুলে এসে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে বিদ্যালয় কর্মচারী (নৈশপ্রহরী) অফিস কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। পরে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ছোট ভাই ও অভিযুক্ত বহিরাগত যুবকের চাচা রুহুল আমিন স্কুলে গিয়ে কোন সমস্যা হবে না বলে আশ্বস্ত করলে নৈশপ্রহরী অফিস কক্ষের দরজা খুলে দেন। দরজা খুলতেই অভিযুক্ত বহিরাগত যুবক ও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বজনরা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাউল নবী লিটন এবং সাইদুল ইসলামকে বেধড়ক মারপিট করে।

প্রত্যক্ষদর্শী বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী মহসিন আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই শিক্ষককে সবচেয়ে বেশি মেরেছে রাহুলের আত্মীয়-স্বজনরা। এর ভেতর সহকারী শিক্ষক সাইদুল ইসলাম বাড়ি ফেরার সময় তার পথরোধ করে আরেকবার মারধর করেছে তারা‌। স্কুলের ভেতর ঢুকে শিক্ষকদের মারধর এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

মারধরের শিকার শিক্ষক সাইদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের স্কুলের ক্যাম্পাসে ঢুকে এক ছাত্রকে মারধর করছিল স্থানীয় এক যুবক। মারধরের পর তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা। পরে বহিরাগত ওই যুবকে স্কুলের শিক্ষকরা অফিসকক্ষে ধরে নিয়ে আসে। এর কিছুক্ষণ পর আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ভাই রহুল আমিনসহ বেশকয়েকজন অফিস রুমে এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়।

এ ঘটনায় অভিযোগ দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে শিক্ষক বলেন, আমি অনেক দূর থেকে এসে ওই স্কুলে চাকরি করি। তারা অনেক প্রভাবশালী। এ ঘটনা আমি প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে বিলদহর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমিনুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি আমাকে কেউ জানায়নি। তবে কোনো শিক্ষককে মারধর করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি দেখছি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে সত্যতা মিললে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Back to top button