নোয়াখালীসারাদেশ

স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে ভাঙচুর

নগর খবর ডেস্ক : নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ঠনারপাড় গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমান নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের (কাঁচি প্রতীক) সমর্থক। অন্যদিকে হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী মোরশেদ আলমের সমর্থক বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

“জানা গেছে, স্বতন্ত্র কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের নিয়মিত প্রচারণার অংশ হিসেবে ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের ঠনারপাড় গ্রামে সমর্থকরা পথসভায় যোগ দেয়। এ সময় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ছোট ছেলে সাইফুল আলম দিপুর নেতৃত্বে একদল সংবদ্ধ হেলমেট বাহিনী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, সন্ধ্যায় ৫০-৬০ জনের একটি দল আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ ও পাঁচ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। পরে বাড়ির দরজা-জানালার কাচ ও ভেতরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ছোট ছেলে সাইফুল আলম দিপুর নেতৃত্বের তার বাহিনী এ হামলা চালায়। তারা আমার বাড়ির কিছুই রাখেনি। ভাঙচুরের পর ব্যাপক লুটপাট করেছে। আমি দিপুর সঙ্গে তর্কও করেছি। তারা সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে গেছে। পুলিশকে গুলির খোসাসহ হামলার আলামত বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক বলেন, ‌বিকেলে চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে আমার নির্বাচনী পথসভা ছিল। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে নৌকার প্রার্থী মোরশেদ আলমের ছেলের নেতৃত্বে হেলমেট বাহিনী তাতে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ব্যাপক হাতবোমার বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করে তারা। পরে চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের বাড়িতে গুলিবর্ষণ করে তাণ্ডব চালায়। নির্বাচনকে বানচাল করতে এবং ভোটারদের কেন্দ্রে না আসতে তারা এ হামলা চালিয়েছে। প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি নিজেও এখন আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। বিষয়টি আমি লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনে জানাব।

তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের (নৌকা) ছেলে সাইফুল আলম দিপু বলেন, আমি আজ ওই এলাকায় ছিলাম না। কারা এ হামলা করেছে সেটিও আমার জানা নেই। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে আমাকে জড়িয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার লোকজন গুজব ছড়াচ্ছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব বলেন, হামলা, ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখন যেহেতু নির্বাচনের সময় তাই স্পর্শকাতর এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করা হবে।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, হামলাকারী যে বা যারাই হোক তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশ তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

প্রসঙ্গত, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের মোরশেদ আলম (নৌকা), স্বতন্ত্র মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়া (কাঁচি), জাসদের নাইমুল আহসান (মশাল), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ (টেলিভিশন), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রবিউল হোসাইন (ছড়ি), জাতীয় পার্টির তালেবুজ্জামান (লাঙ্গল) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কাজী সরওয়ার আলম (হাতঘড়ি)। এ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৪৯টি এবং মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৬০ হাজার ৪৬৪ জন।

Back to top button