f
সারাদেশ

সমতার পথে নতুন দিগন্তে নারী অধিকার

আরিফ হোসেন: নারীদের অধিকার মানবাধিকারের একটি মৌলিক অংশ, যা সমাজের প্রতিটি স্তরের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। ইতিহাসের ধারায় নারীরা বিভিন্ন সময়ে বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তবে আজকের বিশ্বে নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য শতাব্দীর পর শতাব্দী থেকে বহু আন্দোলন হয়ে আসছে। উনিশশো শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে নারীরা ভোটাধিকার, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা এবং নিজেদের মৌলিক অধিকার গুলোর জন্য আন্দোলন শুরু করে। ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইংল্যান্ডে নারীদের প্রথম ভোটাধিকার দেওয়া হয়, যা একটু যুগান্তকারী ঘটনা। পরবর্তীতে, ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ একটি ঘোষণাপত্রে মাধ্যমে নারীদের অধিকারকে মানবাধিকারের অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দেয় । যা সেইসময়ে ব্যাপকভাবে সারা ফেলে।

তবে আজকের বিশ্বে নারীদের অধিকার নিয়ে আলোচনা অনেকটাই প্রসারিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারীরা শিক্ষা,স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এবং রাজনৈতিক অধিকার আর্জন করেছে। তবে এখনো অনেক বিষয় রয়ে গেছে যেমন নারী ও পুরুষের মধ্যে বেতন বৈষম্য, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য এবং পারিবারিক সহিংসতা। এই জিনিস গুলো এখন পরিবর্তন হওয়া দরকার।

মূলত এই লক্ষ্যেই ২০১৫ সালের জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে (SDGS) ”লিঙ্গ সমতা” একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে মূলত নারীদের ক্ষমতায়ন এবং বৈষম্য দূরীকরণে লক্ষ্যে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও এখন বিশ্বের বিভিন্নে দেশের সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান নারীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা,স্বাস্থ্য এবং অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়াও সিভিল সোসাইটির মাধ্যেম নারীদের সবধরনের আইনি সহয়তা এবং পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উদহারণ স্বরুপ আমরা বাংলাদেশের দিকে লক্ষ্যে করলেই দেখতে পাই, এইখানকার নারীদের জন্য সরাসরি প্রতিষ্ঠানের সাথে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন ব্রাক এরা নারীদের উন্নয়নের জন্য অনেক ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও দেশে এখন নারীদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের নতুন আইনের সংযোজন করা হয়েছে। যদিও এতকিছুর পরেও এখনো দেশের নারীরা পুরুষদের তুলনায় অনেকাংশেই পেছনে রয়ে গেছে। এই বিষয় গুলতো এখনো অনেক কাজ করা বাকি।

নারীদের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য, সমাজের সকল স্তরের মানুষের অংশগ্রহণে নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যুব সমাজ বিশেষ করে পুরুষদের নারীদের সমানাধিকারে সমর্থন সব থেকে বেশি জরুরি। কেননা একটি সমানাধিকার ভিত্তিক সমাজই সত্যিকার উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ খুলে দেয়।

নারীদের অধিকার শুধুমাত্র নারীদের জন্য নয়, বরং সমাজের জন্যও অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের অধিকার সুরক্ষার প্রচেষ্টা সামাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই নারীদের অধিকার রক্ষায় সমাজের সকল স্তরের মানুষের এগিয়ে আসতে হবে।

Back to top button