f
সারাদেশ

৯ শাক সবজি ও ফলে ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি প্রতিরোধে কৃষক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশব্যাপী কৃষি বিভাগের উদ্যোগ জরুরী

৯ শাক-সবজি ও ফলে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি প্রতিরোধে মাঠ পর্যায় কৃষকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর নির্দেশে দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে,জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক এর উদ্যোগে এ উদ্যোগ গ্রহন করা অতীব জরুরী।

এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায় কৃষকদের মাঝে জেলা-উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় শাক-সবজি ও ফল চাষাবাদ এবং উৎপান বৃদ্ধিরসহ সার্বিক তথ্য মনিটরিং এর পাশা-পাশি উৎপাদিত শাক-শবজি ও ফলে কোনভাবেই যেন প্রাণ মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক,কীটনাশক,হেভি মেটাল,লেড,ক্রমিয়াম, কাডমিয়ামসহ কোন ধরনের ক্ষতিকারক উপাদানের উপস্থিতি না থাকে সে বিষয়েও মনিটরিং এর প্রয়োজন।

৯ শাক সবজি ও ফলে ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি জানতে পৃথক দুটি গবেষণা পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)।এসব গবেষণায় শাক-সবজিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক ও ফলে পাওয়া গেছে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ। সবজিতে রাসায়নিকের মাত্রা নিয়ে গবেষণা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.শফিকুল ইসলাম ও ড.মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া।তারা বাজার থেকে ৯ ধরনের সবজি সংগ্রহ করেন,এরমধ্যে রয়েছে আলু,বেগুন, ঢ্যাঁড়স, টমেটো, লালশাক,পটল,বাঁধাকপি,শসা ও মটরশুটি ।

গবেষণায় দেখা গেছে,এসব সবজিতে লেড,ক্রমিয়াম,কাডমিয়ামসহ বেশ কয়েকটি রাসায়নিকের উচ্চমাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।তবে এই তালিকায় লালশাকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর মাত্রায় হেভি মেটালের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যেসব সবজিতে হেভি মেটাল রয়েছে সেগুলো দীর্ঘদিন খেলে ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন,গবেষকরা।

লালশাকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী ধাতু পাওয়া গেছে।যেখানে প্রতি কেজিতে ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা-১৯০ মাইক্রোগ্রাম,সেখানে প্রতি কেজি লালশাকে পাওয়া গেছে-৭০৪.৩২ মাইক্রোগ্রাম। আর এমনটায় উঠে এসেছে,এ গবেষণায়। প্রতি কেজি বেগুনে পাওয়া গেছে-২৭৫.৬৬ মাইক্রোগ্রাম,ঢ্যেঁড়শে-৩৪৯ ও প্রতি কেজি টমেটোতেও-১৯৫-মাইক্রো গ্রাম।ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ উপস্থিতি পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা থেকে।
একইভাবে ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতুর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে শিম, শশা, ঢ্যাঁড়শ, পটল ও লালশাকে। লেডের মতো ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বেগুন, বাঁধাকপি, শিম, শশা, ঢ্যাঁড়শ,পটল, টমেটো ও লালশাকসহ ৯টি সবজিতেই।

অন্যদিকে, ফলের গবেষণা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন প্রধান। তার গবেষক দল আম, লিচু, বরই ও পেয়ারার প্রতিটির ৮০টি করে মোট ৩২০টি নমুনা পরীক্ষা করেন। পরীক্ষা শেষে তিনি ৩৯টি নমুনায় কীটনাশকের অবশিষ্টাংশের উপস্থিতি খুঁজে পান। যা মোট নমুনার ১২ দশমিক ১৯ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে (১৮.৮ শতাংশ) পাওয়া গেছে লিচুতে যা খুব উদ্বেগজনক। সবচেয়ে কম পাওয়া গেছে আমে (৮.৮)।

তিনি জানান, ফলের মৌসুমে ঢাকা, রাজশাহী, পাবনা ও বগুড়া থেকে তিনি এসব নমুনা সংগ্রহ করেন।এসবের মধ্যে সর্বোচ্চ অবশিষ্টাংশের সীমা (এমআরএল) এর চেয়ে অতিরিক্ত পাওয়া যায় ৩০টি নমুনায়।

এ সময় গবেষকরা এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য মনিটরিং,উত্তম কৃষি চর্চার ওপর জোর দেওয়া,কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ প্রদান করেন।

রাজধানীর নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত গবেষণার ফলাফল অবহিতকরণ সেমিনারে এসব গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।

Back to top button