স্বতন্ত্র প্রার্থীর অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে তলব
নগর খবর ডেস্ক : লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধানের গাড়ি বহরে হামলা ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলকে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) লালমনিরহাট নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এরশাদ আলী স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলকে শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বশরীরে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে- কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না সেই ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
লালমনিরহাট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। তিনি হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার গড্ডিমারী মেডিকেল মোড় এলাকায় গণসংযোগ করতে গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধানের গাড়ি বহরে হামলা চালান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল ও তার লোকজন। তারা গাড়ি ও অফিস ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা।
তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দাবি, স্বতন্ত্র প্রার্থী গণসংযোগের নামে নৌকার বিরুদ্ধে কথা বললে স্থানীয় লোকজনের বাঁধার মুখে পড়েন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমানের প্রধানের নির্বাচনী এজেন্ট হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হায়াত খান জানান, ওই এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগে গেলে গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী তাদের পথরোধ করে গণসংযোগে বাধা দেন। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহামান প্রধান ও তার সফরসঙ্গীদের ওপর হামলাসহ গাড়ি ও অফিস ভাঙচুর করা হয়।
হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান প্রধানের গণসংযোগে বাধা, গাড়ি ও অফিস ভাঙচুরসহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। তার দাবি, স্বতন্ত্র প্রার্থী গণসংযোগের নামে নৌকার বিরুদ্ধে কথা বললে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে পড়েন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের হামলায় স্থানীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিসহ দুইজন আহত হয়েছেন। ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সর্বদাই জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত রয়েছে। কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণায় বাধার সৃষ্টি হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।