

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় ডিপিএসের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা। আজ সোমবার বিকেলে নগরের ভদ্রায় একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুদ বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির অভিযোগও তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. সজীব। তাঁর বাবাও ওই ডিপিএসে টাকা জমা করেছেন। সজীব জানান, ২০১০ সালের দিকে বাগমারা উপজেলার কালিগঞ্জ এলাকায় ‘গোল্ডেন ডিপিএস’ নামে একটি কোম্পানি আসে। তখন এলাকায় অফিসও করা হয়। এলাকা থেকে ২০০ জনের বেশি মাসিক ২০০ টাকা হারে জমা দিতে থাকে। কেউ তিন বছর, কেউ পাঁচ বছর, কেউ আরও দীর্ঘ দিন টাকা জমা দিয়েছেন। পরে অফিস চলে যায়। এই মানুষগুলো বিপদে পড়েন। এলাকার মানুষজন ভয়ে দীর্ঘ দিন এদের সম্পর্কে কথা বলতে পারেনি। কারণ এরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। শুধু তাই নয়, এর হোতা সাইফুল ইসলাম, তার ছেলে সাজেদুর রহমান, ছেলের শশুর মোজাফ্ফর হোসেন একটি চক্র করেছেন। এরা সুদ বাণিজ্য ও চাঁদাবাজিও করেছেন। এলাকার মানুষ এত দিন ভয়ে কিছু বলতে পারেননি। তবে ৫ আগস্টের পর তারা কথা বলা শুরু করেন। কিন্তু তারা টাকা ফেরত দিচ্ছে না।
সজীব বলেন, তারা এ ঘটনায় আদালতে আজ মামলা করতে এসেছিলেন। সাজেদুর আদালতে একজন আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন। তার প্রভাবে আজ মামলা করতে পারেননি। তবে কাল মামলাটি করবেন।
আব্দুল মজিদ নামে একজন বলেন, গরীব মানুষ হিসেবে সঞ্চয়ের আশায় তিনি ৩৬ হাজার টাকা জমা করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা আজ পর্যন্ত ফেরত দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে সাজেদুর রহমান বলেন, অনেক আগে গোল্ডেন লাইফ ইন্সুরেন্স ‘গোল্ডেন ডিপিএস’ নামে একটি ডিপিএস এসেছিল এলাকায়। তখন অফিসও ছিল। তিনিসহ তার বাবা ফিল্ড লেবেলে কাজ করতেন। তখন টাকা জমা নেওয়া হত। কিন্তু কয়েক বছর পর দেখা গেল টাকা জমা করার ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ কম। তখন সবাইকে রাজশাহী অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে তারা এখান থেকে সরে যান। অনেকে তখন টাকা তুলে নিয়েছেন। আবার অনেকে রাজশাহী অফিসের মাধ্যমে টাকা জমা করেছেন। বহু বছর পর এখন তারা এই দাবি করছে। তারা এখনও অফিসে যথাযথ প্রক্রিয়ায় কাগজপত্র নিয়ে গেলে টাকা পাবেন। এখানে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কোনো বিষয় নেই।
তিনি আরও বলেন, তারা এটা টাকার জন্য করছেন না। তারা তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এটা করছেন। তারা এখন নিজেদের বিএনপি দাবি করছেন। কিন্তু তারা বিএনপি করেন না। আর তার শশুর একজনকে টাকা দিয়েছিলেন। গ্রামে টাকা নিলে তো সুদ দিতে হবেই।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র একদল মানুষ তার কাছে এসেছিলেন। তখন টাকা ডিপিএসের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বলছিলেন। তিনি তখন বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। পরে আর থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি।