নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর মোহনপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে মো: সাদ্দাম আলী হত্যাকান্ডের মূল ঘটনা আড়াল করে মনগড়া তথ্য দিয়ে তড়িঘড়ি করে মামলা রেকর্ড করার অভিযোগ উঠেছে মোহনপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ২ টায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলে ধরেন নিহত সাদ্দাম আলীর ভাই বুলবুল হোসেন ও স্ত্রী মোছা: রেহেনা বিবিসহ পরিবারের লোকজন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টার সময় ধরালো হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে মো: সাদ্দাম আলীকে হত্যা করে প্রতিবেশী গ্রামের একছার আলীসহ তার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার দিনই একছার আলীকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে স্থানীয়রা। তবে প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও হত্যার সাথে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করেনি মোহনপুর থানা পুলিশ।
তারা বলেন, নিহত মো: সাদ্দাম আলীর মরদেহ দাফনের পর মোহনপুর থানায় মামলা করতে গিয়ে জানতে পারে এ ঘটনায় একটি হত্যার মামলা আগেই দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু মামলার বিষয়ে কিছু জানেনা উক্ত মামলার বাদি মোছা: রেহেনা বিবি। তার অভিযোগ মোহনপুর থানা পুলিশ ময়না তদন্তের কথা বলে স্বাক্ষর নিয়ে মনগড়া এজাহার করে তড়িঘড়ি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশের দায়ের করা মামলায় ঘটনার সাথে হত্যা ঘটনার বিবরণের কোন মিল নেই। প্রকৃত ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে এবং মামলায় একছার আলী ছাড়া অন্য আসামিরা হত্যার সাথে জড়িত নেই। এ বিষয়ে হত্যার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে মোহনপুর থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয় ভুক্তভোগী পরিবারকে। প্রকাশ্যে হত্যাকান্ডের মূল আসামীদের নামে মামলা না নেওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যান সাদ্দাম আলীর পরিবার।
তারা আরো বলেন, মোহনপুর থানায় মামলা না নেওয়ায় প্রকৃত ঘটনার বিবরণ দিয়ে হত্যার সাথে জড়িত মোহনপুর উপজেলার বড় পালশা গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিন ছেলে একছার আলী (৪০), আনছার আলীর স্ত্রী মোছা: হালিমা (৫০), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে মো: কামাল হোসেন (৩০) একছার আলীর স্ত্রী আঙ্গুরা (৩৫), মৃত ইয়াছিন মোল্লার ছেলে মো: সাজ্জাদ মোল্লা (৪৫), মৃত আজিদের ছেলে মো:আক্তারুজ্জামানকে আসামি করে রাজশাহী বিজ্ঞ মোহনপুর আমলী আদালত মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৫১২। এরপর থেকেই আসামীরা প্রতিনিয়ত আমাদের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করছি আমরা। এ বিষয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা কাম্য। যতদ্রুত সম্ভব এ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে আসামীদের কঠিনতম শাস্তি দিয়ে সঠিক বিচারের দাবি জানান তারা।
ঘটনার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল অনুমান ৫ টার সময় মোহনপুর উপজেলার বড় পালশা গ্রামের নিহত সাদ্দাম আলীকে একই গ্রামের মো: কামাল ডেকে নিয়ে একছার আলীর বাড়িতে নিয়ে যায়। ধারালো হাঁসুয়া, লাঠি শোটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মো: কামাল হোসেনে হুকুমে একছার আলী ধারালো লম্বা হাঁসুয়া দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য সাদ্দাম আলীকে কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখন করে। নিহত সাদ্দাম আলীকে বাঁচতে ভাই বুলবুল হোসেন এগিয়ে আসলে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ওই সময় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাদ্দাম আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। বুলবুল হোসেনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রামেক হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চায়লে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান হান্নান বলেন, ‘বাদীর করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা মামলা নথিভূক্ত করেছি। এখন তিনি কি দাবি করছেন, সেটি তার ব্যাপার। তবে আমরা কোনো আসামির নাম আমাদের মতো করে এজাহারে দেয়নি।’